বন্ধুরা সবাই এসো, আজ আমরা একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং হৃদয়স্পর্শী বিষয় নিয়ে কথা বলব!
আপনারা কি জানেন যে বয়স্কদের প্রতি নির্যাতন ও অবহেলার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি বিশেষ দিন রয়েছে?
হ্যাঁ, ঠিক তাই, প্রতি বছর ১৫ই জুন পালিত হয় বিশ্ব বয়স্ক নির্যাতন ও অবহেলার সচেতনতা দিবস।
এটি কোনো সাধারণ দিন নয়; এই তারিখের পেছনে একটি স্পষ্ট কারণ রয়েছে। এটি ২০১১ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল, তবে এর উদযাপন শুরু হয় ২০০৬ সালে ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক ফর দ্য প্রিভেনশন অফ এল্ডার অ্যাবিউজ (INPEA) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে। তাই বুঝতেই পারছেন, এটি কোনো সাম্প্রতিক আবিষ্কার নয়।
তাহলে এই বিশেষ দিনের উদ্দেশ্য কী? মূলত, এর লক্ষ্য বয়স্কদের প্রতি নির্যাতনের বিষয়টিতে মনোযোগ দেওয়া, তাদের স্বাস্থ্য, কল্যাণ এবং মর্যাদা প্রচার করা।
কেন? কারণ, বিশ্বাস করুন বা না করুন, অনেক বয়স্ক মানুষ নির্যাতন ও অবহেলার শিকার হন, এবং সবসময় তাদের অভিযোগ করার সুযোগ থাকে না। তাই এই দিনটি একটি বিশ্বব্যাপী মেগাফোনের মতো কাজ করে যাতে সবাই শুনতে পারে।
এখন কল্পনা করুন যদি সরকার, সংগঠন এবং আপনি, প্রিয় পাঠক, সবাই একটু একটু করে এই কারণের সাথে যুক্ত হই। আমাদের দাদু-দিদাদের সুরক্ষায় আরও কার্যকর কৌশল এবং কঠোর আইন প্রণয়ন করার জন্য সবাই যদি অংশগ্রহণ করি তাহলে কত ভালো হতো?
হ্যাঁ, এটি একটি চমৎকার ধারণা এবং ঠিক এজন্যই প্রতি ১৫ই জুন বিশ্বব্যাপী এই সমস্যার সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। আর ভাববেন না এটি শুধুমাত্র একঘেয়ে বক্তৃতা; প্রথম উদযাপন হয়েছিল জাতিসংঘের নিউ ইয়র্ক সদর দফতরে।
আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা আমরা ভুলতে পারি না: বেগুনি রিবন। এটি বিশ্ব বয়স্ক নির্যাতন ও অবহেলার সচেতনতা দিবসের প্রতীক। তাই প্রতি ১৫ই জুন বেগুনি রিবন দেখলে বুঝবেন এর অর্থ কী।
এখন আসি এই কথোপকথনের ইন্টারেক্টিভ অংশে। কখনও কি ভেবেছেন আপনি কি এমন কোনো বয়স্ক ব্যক্তিকে চেনেন যিনি সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারেন?
আপনার কাছের কেউ হয়তো নির্যাতনের শিকার হতে পারে কিন্তু আপনি তা বুঝতে পারেননি? এক মিনিট সময় নিয়ে এ বিষয়ে চিন্তা করুন। যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তাহলে এখনই কাজ শুরু করুন! সামান্য সহায়তা অনেক বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
আমরা কীভাবে আমাদের ছোট্ট অবদান রাখতে পারি?
বয়স্কদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এমন একটি বিষয় যা আমাদের সকলের মনে রাখা উচিত। আমরা সবাই একদিন সেখানে পৌঁছাবো, তাই উদাহরণ স্থাপন করা জরুরি!
এখানে কিছু ধারণা দেওয়া হলো যা আপনার বয়স্কদের সাথে সম্পর্ক উন্নত করতে এবং তাদের প্রাপ্য ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শনে সাহায্য করবে:
১. সক্রিয় শ্রবণ:
হ্যাঁ, সত্যিকার অর্থেই মনোযোগ দিয়ে শোনা! শুধু মোবাইল দেখে শোনার ভান করবেন না। বয়স্কদের কাছে অসাধারণ অভিজ্ঞতা ও গল্প থাকে; তাদের প্রতি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিলে তারা মূল্যবান বোধ করেন।
২. ধৈর্যই মূল চাবিকাঠি:
কখনও কখনও তাদের কিছু বলতে বা করতে একটু বেশি সময় লাগে। তাই ধীরে ধীরে এগিয়ে যান এবং তাদের স্থান দিন, এতে তারা বুঝবে আপনি সত্যিই তাদের যত্ন নেন।
৩. বেশি বেশি ফোন করুন:
একটি ফোন কল, একটি বার্তা বা এমনকি একটি সাক্ষাৎ—সবই গুরুত্বপূর্ণ! কখনও কখনও শুধু জিজ্ঞাসা করলেই তাদের দিন সুন্দর হয়ে যায়।
৪. প্রযুক্তিতে সাহায্য করুন:
কেউ না কেউ তো দেখেছেন দাদু মোবাইল নিয়ে ঝগড়া করছেন! তাদের ডিভাইস ব্যবহারে সাহায্য করুন। ধৈর্য ধরে এবং শান্তভাবে ব্যাখ্যা করুন।
৫. তাদের মতামতকে মূল্য দিন:
প্রশ্ন করুন এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গি শুনুন। যদিও সবসময় একমত না হলেও, তাদের অভিজ্ঞতাকে সম্মান দেখানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৬. চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সময় সঙ্গ দিন:
চিকিৎসকের কাছে যাওয়া তাদের জন্য চাপের কারণ হতে পারে। আপনি যদি সঙ্গ দিতে পারেন, তারা অবশ্যই কৃতজ্ঞ হবেন।
৭. যৌথ কার্যক্রম পরিকল্পনা করুন:
একসাথে মজার কিছু করার পরিকল্পনা করুন: রান্না করা, কোনো বোর্ড গেম খেলা বা শুধু হাঁটতে যাওয়া। এই মুহূর্তগুলো অমূল্য।
৮. শুভেচ্ছা ও সম্মান প্রদর্শন:
ভদ্রতা সবসময় ভালো লাগে। একটি নম্র অভিবাদন, ধন্যবাদ বলা বা আগে যেতে দেওয়া—এসব ছোট ছোট ব্যাপার অনেক কিছু বলে দেয়।
৯. শিশুসুলভ আচরণ এড়িয়ে চলুন:
তাদেরকে শিশু হিসেবে কথা বলা বা বোঝার ক্ষমতা নেই ভাবা ঠিক নয়। তারা অন্য যেকোনো প্রাপ্তবয়স্কের মতো সম্মান পাওয়ার যোগ্য।
১০. অন্যদের শিক্ষিত করুন:
যদি আপনার আশেপাশে কেউ বয়স্কদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে, তাদের থামান। সবাইকে সচেতন হওয়া জরুরি।
বিনামূল্যে সাপ্তাহিক রাশিফল সাবস্ক্রাইব করুন
কন্যা কর্কট কুম্ভ তুলা ধনু বৃশ্চিক বৃষ মকর মিথুন মীন মেষ সিংহ